ইউডিসি কিঃ অবাধ তথ্য প্রবাহ জনগণের ক্ষমতায়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। বিশেষ করে অনগ্রসর জনগনের মাঝে তথ্য প্রবাহ নিশ্চত করার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন সম্ভব। তৃণমূল পর্যায়ে সকলের দোরগোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌঁছে দিয়ে জনগনের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউডিসি) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ- রূপকল্প ২০২১ বাসত্মবায়নে এমন একটি অত্যাধুনিক তথ্য সেন্টার (টেলিসেন্টার) যার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোড়গোড়ায় সহজে সুলভে ও দ্রম্নত তথ্য ও সেবা পৌঁছানো সম্ভব।
ইউআইএসসি এর উদ্যোক্তা/পরিচালকঃপ্রতিটি ইউআইএসসিতে দু’জন (একজন পুরম্নষ ও একজন মহিলা) প্রশিক্ষিত/দক্ষ/উদ্যোগী উদ্যোক্তা থাকবেন, যাদের তথ্য ও সেবা সন্ধান এবং তা প্রদানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও যথাযথ জ্ঞান থাকবে। কুমিলস্না জেলার ১৬টি উপজেলার ১৭৮ টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ডেস্কটপ/ল্যাপটপ কম্পিউটার, স্ক্যানার, ওয়েব ক্যাম, মডেম, প্রিন্টারসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের জন্য দুইজন করে শিক্ষিত যুবক/যুব মহিলা নির্বাচন করে তাদেরকে জেলা পর্যায়ে ১০ (দশ) দিনের নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্ত হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
ইউডিসি ব্যবস্থাপনাঃইউডিসি পরিচালনার জন্য ৭-৯ সদস্যের পরিচালনা কমিটি থাকবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে এই কমিটির প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই কমিটির মেয়াদ ০২ (দুই) বছর।
ইউডিসিতে তথ্য ও সেবার তালিকা এবং মূল্যঃ ইউডিসির তথ্যভান্ডারে তথ্য ও সেবা থাকবে দু’ভাবে- অফলাইন ও অনলাইনে। তথ্যভান্ডারে তথ্য ও সেবা সাজানো থাকবে এনিমেশন, ভিডিও, অডিও এবং টেক্সট- এই চার ফরমেটে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য (অনলাইন): ইউডিসিতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে যার মাধ্যমে ইউনিয়নের যে কোন ব্যক্তি সারা পৃথিবীর সঙ্গে যোগযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবেন। দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।
অফলাইন তথ্যভান্ডারঃইন্টারনেটের বাইরে এক বিশাল তথ্যভান্ডার থাকবে ইউডিসিতে। এই (অফলাইন) তথ্যভান্ডারে থাকবে থাকবে জীবিকা ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য সেবা; যেমন- কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন ও মানবাধিকার, কর্মসংস্থান, বাজার, বিভিন্ন সরকারী ফরম প্রভৃতি।
বাণিজ্যিক সেবা (১): ইউডিসিতে সুলভ মূল্যে বাণিজ্যিক সেবা পাওয়া যাবে; যেমন-ই-মেইল পাঠানো, ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা, কম্পিউটার কম্পোজ করা, প্রিন্টিং করা, রঙ্গিন ছবি তোলা, স্ক্যানিং করা, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ভাড়া নেওয়া প্রভৃতি।
বাণিজ্যিক সেবা (২): ইউডিসিতে সুলভ মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ হবে সহজ, সুলভ ও স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন আয় বৃদ্ধিমূলক উদ্যোগের ওপর; যেমন বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য তৈরী, শিল্প উপকরণ তৈরী (যেমন মোমবাতি), টেইলারিং, বৈদ্যুতিক উপকরণ মেরামত, জৈব সার উৎপাদন প্রভৃতি।
পরামর্শ সেবাঃইউডিসি থেকে যাতে করে সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিয়মিত পরামর্শ সেবা (যেমন কৃষি, স্বাস্থ্য প্রবৃতি বিষয়ে) পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করবে ইউনিয়ন পরিষদ। পরামর্শ সেবার মধ্যে থাকবে মাটি পরীক্ষা সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, মাছ চাষ, স্বাস্থ্য, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, আইন বিষয়ক পরামর্শ প্রভৃতি।
তথ্য ও সেবার মূল্যঃইউডিসিতে অফলাইন তথ্যভান্ডারের সকল তথ্য বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। তবে অফলাইনের কোন তথ্য ও সেবা টেক্সট আকারে পিন্ট করে নিতে হলে তার জন্যে ইউডিসি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অনলাইন ভিত্তিক সকল তথ্য ও সেবা মূল্য পরিশোধ করে সংগ্রহ করতে হবে। সকল বাণিজ্যিক সেবা ইউডিসি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে সংগ্রহ করতে হবে। তবে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ সেবা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস